সখীপুরে মসজিদের ইমামকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে কচুয়া ভাঁতকুড়াপাড়া হযরত বিল্লাল (রা.) জামে মসজিদের ইমামকে একটানা ১২ বছর দায়িত্ব পালন শেষে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার(১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে ওই মসজিদ প্রাঙ্গনে জুমআর নামাজ শেষে ইমাম হাফেজ শহিদুল ইসলামকে এ বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ইমাম শহিদুল ইসলামকে সংবর্ধনা জানাতে গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ছুটে আসেন মসজিদে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী গ্রাম কচুয়া উত্তর কামান্নাপায়াড়া এলাকায় তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

এসময় ইমাম হাফেজ শহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন আমি এই মসজিদ মাদ্রাসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। আল্লাহ তায়ালা কখন কাকে কোথায় রাখেন সেটি আল্লাহই জানেন। আমার বাড়ি যেহেতু এখানেই, আমি এখান থেকে যাওয়ার পরও আপনাদের সাথে দেখা হবে তবে সেটি আজকের দিনের মত হবেনা।

আমি আপনাদের সাথে দীর্ঘদিন মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করেছি, আমার রিজিক আপনাদের মসজিদে হয়তো এ পর্যন্তই ছিল তাই চলে যেতে হচ্ছে।
আমি ছাত্র জীবন থেকে মসজিদের খেদমতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। আমি আপনাদের জন্য দোয়া করি আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন। এরপর তিনি মসজিদের মোহাব্বতে হাদিয়া দিয়ে দেন। এসময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে উপরোক্ত কথা বলেন।

টিনের মসজিদে মসজিদ মাটির মেঝে ছিল, আসার পর মসজিদ বিল্ডিং, পানির পাম্প, সামাজিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা জামিয়া আরাবিয়া মুছলেহা বশির মাদানি নেসাব ও নুরানি ক্যাডেট মাদ্রাসা।

মসজিদের সভাপতি এবং সখীপুর রুপা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ্ব বশির আহমেদ বলেন, আমাদের ইমাম সাহেবকে শুধু ইমাম হিসেবে দেখিনাই তাকে আমার ভাতিজার মত দেখতাম। আমি হুজুরকে অনুরোধ করবো আপনি আগের মতই মসজিদে আসবেন।

মসজিদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, মসজিদের সার্বিক উন্নয়নেই  আমাদের ইমাম সাহেব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন৷ তার বিদায়ে আমরা আবেগে আপ্লুত।

মসজিদের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান বলেন, হুজুর দীর্ঘদিন মসজিদে ছিল,মসজিদের সার্বিক উন্নয়নে হুজুরের অনেক অবদান আছে, আমরা খুশি মনে হুজুর কে বিদায় দিচ্ছি।

মসজিদের মুসল্লি মনির হোসেন বলেন, আমি হুজুরের কাছেই কায়দা পড়ি, হুজুর আমাদের সাথে সবসময় হাসিখুশিভাবে থাকতো, সালাম দিলে খুশি মনে উত্তর দিতো, একজন ইমামের যে গুণ থাকা দরকার আমি করি হুজুরের মধ্যে তা ছিল।

মাহির ইসলাম সোহেল বলেন, হুজুর যখন আমাদের মসজিদে সকালের মক্তবে কুরআন পড়াতেন তখন আমার ৯ বছর,আমি হুজুরের কাছেই পবিত্র কুরআন পড়া শিখেছি, সব সময় দেখেছি হুজুর মসজিদের উন্নয়নের প্রতি খেয়াল রাখতেন এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলনা।

মসজিদে সংবর্ধনা শেষে হাফেজ মোঃ শহিদুল ইসলামকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।

সর্বশেষ নিউজ