ফেনীর পরশুরামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।দলটির ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর ব্যানারে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় এই সংঘর্ষ হয়।বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মধুগ্রামে বিএনপির ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর ব্যানারে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সুবার বাজারে দুই গ্রুপের মহড়া চলে।এসময় দৈনিক ভোরের কাগজের উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান ভিডিও ও ছবি তোলার চেষ্টা করলে স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তাকে পিটিয়ে আহত করে ও তার হাতে থাকা মোবাইল ভাংচুর করে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার(১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে মির্জানগর ইউনিয়নের মধুগ্রামে উপজেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ বি এম দাউদ এর নেতৃত্বে এবং পরশুরাম উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আবছার এর সঞ্চালনায় রফিকুল আলম মজনুর ব্যানারে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ টাকা প্রদান অনুষ্ঠান চলাকালে উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম সরকারের নেতৃত্বে ইউনিয়ন যুবদলের স্থানীয় আরেকটি গ্রুপ হামলা চালায়।
এসময় তারা অনুষ্ঠান স্থলের চেয়ার ভাংচুর করে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন যুবদল ও ছাত্রদলের ৫ জন (ইমন,আইয়ুব, রাব্বি, শাহাদাত, লিমন) নেতাকর্মী আহত হয়। পরে সন্ধ্যায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুবার বাজারে দুই গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয় এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ চলেএসময় সুবার বাজারে একাধিকবার দুই গ্রুপের মুখোমুখি সংঘর্ষে সেলিম সরকার গ্রুপের শাহিন, দিদার, আবুল হাশেম, রণি আলামিন, মোবারক, রাজন, সোহেলসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয় বলে অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মো: শাহজালাল।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আবছার জানান, আমরা মজনু ভাইয়ের ব্যানারে ওনার পক্ষে মধুগ্রামে বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শান্তিপূর্ণভাবে নগদ অর্থ বিতরণ করছিলাম। এসময় উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম সরকারের সমর্থিত একটি দল আমাদের শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে হামলা চালায় এবং অনুষ্ঠান স্থলে চেয়ার ভাংচুর ও আমাদের দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। পরে আমরা এই ঘটনা উপজেলা এবং ইউনিয়ন বিএনপিকে জানাই।
কিন্তু সন্ধ্যায় তারা আবার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে সুবার বাজারে অবস্থান করে এবং আমাদের ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীকে ধাওয়া করে পরে আমাদের ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা মুখামুখি অবস্থান করলে তাদের সাথে সংঘর্ষ বাধে।তিনি অভিযোগ করে বলেন, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দলীয় অনুষ্ঠানকে বিতর্কিত করতে এমন হামলা চালায়। আমরা দলের উপজেলা এবং জেলা শীর্ষ নেতাদের এই ঘটনা জানিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবীও করেন এই নেতা।
অপরদিকে, উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম সরকারের সমর্থিত গ্রুপের সদস্য ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মো: শাহজালাল জানান, মধুগ্রামে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আবছার একজন ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠান করছিলেন। এসময় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে দেখে আমাদের ছেলেরা প্রতিবাদ করে তবে সেখানে তেমন কিছুই হয়নিযা হয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকে বিএনপির ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে দেখে তাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় হয়েছে কিন্তু তারা সেই ঘটনায় সুবার বাজারে পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলার প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের ছাত্রদলের প্রায় ১ ডজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় আমরা ইতিমধ্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু তালেবসহ অন্যান্য উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
পরশুরাম মডেল থানার (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, সুবার বাজারে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের বিষয়ে জেনেছি তবে এই বিষয় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। শুনেছি স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ঘটনার সমাধান হয়েছে।