টাঙ্গাইল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মিছিলে হামলা ও গুলির অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত যুবক লাল মিয়া বাদী হয়ে টাঙ্গাইল থানায় শনিবার(৩১ আগস্ট) রাতে মামলাটি দায়ের করেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লোকমান হোসেন রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী লাল মিয়া (৩০) কালিহাতী উপজেলার চিনামুড়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুককে হুকুমদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপর ২২৯ আসামির মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের ছাড়াও রয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, শাহজাহান আনছারী ও কুদরত এলাহী খান; যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সাহা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ তারেক পুলু, উপদপ্তর সম্পাদক আনন্দ মোহন দে।
আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন, টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র হাফিজুর রহমান স্বপন, সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ আহমেদ, কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নুর এ আলম সিদ্দিকীসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে। তবে সরকার পতনের পর থেকে মামলায় উল্লেখিত আসামিদের অধিকাংশই আত্মগোপণে চলে গেছেন বলে জানা যায়। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের জেলা সদর সড়কের বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পৌঁছলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শটগান, পিস্তলসহ আগ্নেয়াস্ত্র এবং চাপাতি, রামদা, কুড়ালসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে আসামিরা মিছিলে হামলা করেন। তাঁদের ছোড়া গুলি বাদীর বাঁ পায়ের হাটুর নিচে বিদ্ধ হয়।
পরে তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানেও তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রকাশ, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জেলায় দুই শিক্ষার্থী হত্যা ও আহতের ঘটনায় জেলা সদর, মির্জাপুর ও সখীপুর থানায় পৃথক তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় জেলার মোট ৮ জন সাবেক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ’ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতের এ মামলায় শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।